Wellcome to National Portal
মেনু নির্বাচন করুন
Main Comtent Skiped

শিরোনাম
সাড়ে ৪৫ হাজার চৌকিদার দফাদার জাতীয় স্কেলে বেতন পেতে যাচ্ছে শীঘ্র বিধিমালা জারি করতে যাচ্ছে সরকার
বিস্তারিত

দেশের সকল গ্রামপুলিশকে জাতীয় (সরকারী) বেতন স্কেলের আওতায় আনা হচ্ছে। এতে সকল চৌকিদার বা মহল্লাদার ও দফাদার দেশে প্রচলিত জাতীয় বেতন স্কেলে বেতন পাবে। একই সঙ্গে তারা পদোন্নতি, উৎসবভাতা, ভ্রমণভাতা, দায়িত্বভাতা, সম্মানী ও বিভিন্ন প্রকার ছুটিও প্রাপ্য হবে। দায়িত্বে অবহেলা করলে তাদের চাকরি থেকে অপসারণ, বরখাস্তসহ বিভিন্ন প্রকার দ-ের বিধান রেখে স্থানীয় সরকার গ্রামপুলিশ বাহিনী (নিয়োগ, প্রশিক্ষণ, শৃঙ্খলা এবং চাকরির শর্তাবলী নির্ধারণ) বিধিমালা জারি করতে যাচ্ছে সরকার। দেশে বিদ্যমান প্রায় সাড়ে ৪৫ হাজার গ্রামপুলিশকে সরকারী বেতন স্কেলের আওতায় আনতে বছরে মোট খরচ হবে প্রায় সাড়ে চার শ’ কোটি টাকা।
সরকার দেশের সকল চৌকিদার, মহল্লাদার ও দফাদারকে জাতীয় বেতন স্কেলের আওতায় আনার উদ্যোগ নিলেও দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে এখন তাদের তেমন কর্মতৎপরতা নেই বলে অভিযোগ উঠেছে। আধুনিক যুগে বর্তমান প্রজন্মের কাছে এরা যেন অচেনা। সরকারী বেতনের আওতায় আনার পাশাপাশি আবারও এদের কার্যকর হিসেবে গড়ে তুললে গ্রামের মানুষও নানাভাবে উপকৃত হবে বলে বিশেষজ্ঞ মহল মনে করে।
স্থানীয় সরকার বিভাগের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, স্থানীয় সরকার গ্রামপুলিশ বাহিনী (নিয়োগ, প্রশিক্ষণ, শৃঙ্খলা ও চাকরির শর্তাবলী নির্ধারণ) বিধিমালার খসড়া তৈরি করে তা আইন মন্ত্রণালয়ে ভেটিংয়ের জন্য পাঠানো হয়েছে। ভেটিং শেষে শীঘ্রই বিধিমালাটির প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে। বিধিমালা জারির পর থেকে এটি কার্যকর করা হবে।
গ্রামপুলিশ বাহিনীর ক্ষমতা, দায়িত্ব ও কর্তব্য ॥ গ্রামপুলিশ বাহিনীর প্রতিটি সদস্যকে এই বিধিমালায় বর্ণিত ক্ষমতা প্রয়োগ এবং দায়িত্ব ও কর্তব্য পালন করতে হবে।
মহল্লাদার ॥ ইউনিয়ন পরিষদ কর্তৃক নির্ধারিত এলাকায় নিয়মিত পাহারা দিতে হবে এবং প্রয়োজনে রাতেও পাহারা প্রদান করতে হবে। তার কর্মস্থল সংশ্লিষ্ট থানার ১০ কিলোমিটারের মধ্যে হলে সপ্তাহে একবার এবং ১০ কিলোমিটারের বেশি হলে প্রতি দুই সপ্তাহে একবার থানায় প্যারেডে অংশগ্রহণ করতে হবে। সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের দফাদারের আইনসঙ্গত সকল আদেশ পালন করবে। থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কর্তৃক প্রদত্ত আদেশ ও অর্পিত দায়িত্ব পালন করবে। ইউনিয়ন পরিষদের কর, রেট, ফি ইত্যাদি আদায়ের দায়িত্ব পালনরত ব্যক্তিকে ওই দায়িত্ব পালনে সহায়তা প্রদান করবে। গ্রাম আদালত সম্পর্কে জনসাধারণকে অবহিত করবে। দায়িত্বপ্রাপ্ত এলাকায় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের নির্দেশ মোতাবেক নোটিস জারি, গ্রাম আদালতের সম্মান বজায় রাখার প্রয়াস চালাবে। এছাড়াও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের নির্দেশ মোতাবেক গ্রাম আদালত পরিচালনার সময় আদালতের নিরাপত্তা রক্ষা, দায়িত্বপ্রাপ্ত এলাকার জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধনের তথ্য দফাদারের মাধ্যমে ইউনিয়ন পরিষদে দাখিল করা; দাফতরিক ব্যবহারের জন্য প্রয়োজনীয় তথ্যাদি ইউনিয়ন পরিষদে সরবরাহ করা, কোন ব্যক্তি বা ব্যক্তিসমষ্টি কর্তৃক কোন অপরাধ সংঘটনের পাঁয়তারা করতে অথবা অপরাধ সংঘটনের পরিকল্পনা করছে মর্মে প্রতীয়মান হলে অবিলম্বে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এবং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানকে অবহিত করা, কোন ব্যক্তি বিস্ফোরক দ্রব্য ক্রয়-বিক্রয় করলে বা বহন করলে অথবা বিস্ফোরক দ্রব্য দ্বারা কোন কিছু তৈরি করলে অবিলম্বে তা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এবং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে অবহিত করবে।
দফাদার ॥ অধীনস্থ মহল্লাদারদের দায়িত্ব বণ্টন করবে এবং তাদের কর্মকা- তদারকি করবে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কর্তৃক সরবরাহকৃত একটি নোটবুক সংরক্ষণ করবে এবং এতে নির্দেশিত উপায়ে তথ্যাদি লিপিবদ্ধ করবে। সময় সময় দিনে ও রাতে গ্রামে পাহারা দেবে এবং সমগ্র ইউনিয়ন এলাকায় নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য দায়িত্ব পালন করবে। সপ্তাহে অন্তত দুই দিন ও দুই রাত মহল্লাদারের কার্যক্রম আকস্মিকভাবে পরির্দশন করবে এবং মহল্লাদারকে তার কর্তব্য পালন সম্পর্কে সজাগ করবে। সপ্তাহে একদিন থানায় প্যারেডে অংশ গ্রহণ করবে এবং দাফতরিক প্রয়োজনে অথবা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার নির্দেশ অনুসারে থানায় হাজিরা প্রদান করবে। কম্পিউটার এবং ইন্টারনেট ব্যবহারের মাধ্যমে কোন অপরাধ সংঘটিত হওয়ার কোন খবর পেলে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানকে এবং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে তা অবহিত করবে।
চাকরির সাধারণ শর্তাবলী ॥ জাতীয় বেতন স্কেল, ২০০৯ এর আলোকে এই কর্মচারীদের বেতন ও ভাতা নির্ধারিত হবে। কোন পদে কোন কর্মচারীকে নিয়োগের সময় ওই পদের জন্য নির্ধারিত বেতনক্রমের সর্বনিম্ন স্তরই হবে তার প্রারম্ভিক বেতন। সরকার তার কর্মচারীদের বেতন সংরক্ষণের উদ্দেশে সময় সময় যে নির্দেশাবলী জারি করে সে অনুসারে পরিষদের কর্মচারীদের বেতন সংরক্ষণ করা হবে। কোন কর্মচারীর পদোন্নতির ক্ষেত্রে যে পদে তাকে পদোন্নতি প্রদান করা হবে, সেই পদের জন্য নির্ধারিত বেতনক্রমের সর্বনিম্নস্তরে তার বেতন নির্ধারিত হবে। বেতন বৃদ্ধি স্থগিত রাখা না হলে সাধারণত সময়মতা নির্ধারিত বর্ধিত বেতন প্রাপ্য হবে। কোন শিক্ষানবিস সাফল্যজনকভাবে শিক্ষানবিসকাল সমাপ্ত না করলে এবং চাকরিতে স্থায়ী না হলে, সে বেতন বর্ধনের অধিকারী হবে না। প্রশংসনীয় বা অসাধারণ কর্মের জন্য পরিষদ, কোন কর্মচারীকে একসঙ্গে অনধিক দু’টি বিশেষ বেতন বর্ধন মঞ্জুর করতে পারবে। কোন কর্মচারীকে পরবর্তী উচ্চপদে পদোন্নতির জন্য বিবেচনা করা যাবে। কেবল জ্যেষ্ঠতার কারণে কোন ব্যক্তি অধিকার হিসেবে তার পদোন্নতি দাবি করতে পারবে না। কোন কর্মচারীকে তার অসাধারণ কৃতিত্ব, কর্তব্যনিষ্ঠা এবং চাকরিকালে উচ্চতর পদের জন্য প্রয়োজনীয় পেশাগত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার কারণে ব্যতিক্রমী হিসেবে, পালা অতিক্রম, পদোন্নতি দেয়া যেতে পারে।
নিয়োগ, শিক্ষানবিসি এবং স্থায়ীকরণ ॥ বিধিমালায় নিয়োগের ক্ষেত্রে দু’টি পদ্ধতির কথা বলা হয়েছে। একটি সরাসরি নিয়োগ। অপরটি হলো পদোন্নতির মাধ্যমে।
সরাসরি নিয়োগ ॥ নিয়োগকর্তৃপক্ষ কর্তৃক গঠিত বাছাই বা নির্বাচন কমিটির সুপারিশ ব্যতিরেকে কোন পদে কোন ব্যক্তিকে সরাসরি নিয়োগ করা যাবে না। কোন পদে সরাসরি নিয়োগের জন্য কোন ব্যক্তি যোগ্য বলে বিবেচিত হবে না, যদি সে বাংলাদেশের নাগরিক না হয়, অথবা বাংলাদেশের স্থায়ী বাসিন্দা না হয়; বাংলাদেশের নাগরিক নয় এমন কোন ব্যক্তিকে বিবাহ করে বা বিবাহের জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয়। এছাড়া স্বাস্থ্যগত সমস্যা, দৈহিক বিকলাঙ্গ হলে সে সরাসরি নিয়োগের অযোগ্য বলে বিবেচিত হবে।
পদোন্নতির মাধ্যমে ॥ পরিষদ কর্তৃক গঠিত সংশ্লিষ্ট বাছাই কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে পরবর্তী উচ্চতর কোন পদে পদোন্নতির মাধ্যমে নিয়োগ করা যাবে। যদি কোন ব্যক্তির চাকরির বৃত্তান্ত সন্তোষজনক না হয় তা হলে সে কোন পদে পদোন্নতির মাধ্যমে নিয়োগের জন্য যোগ্য বলে বিবেচিত হবে না।
শিক্ষানবিসি ও স্থায়ীকরণ ॥ কোন স্থায়ী শূন্য পদের বিপরীতে নিয়োগের জন্য বাছাইকৃত ব্যক্তিকে শিক্ষানবিসি স্তরে-সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে, নিয়োগের তারিখ থেকে এক বছরের জন্য এবং পদোন্নতির ক্ষেত্রে, চাকরিতে প্রথম যোগদানের তারিখ থেকে এক বছরের জন্য নিয়োগ করা যাবে। তবে শর্ত থাকে যে, নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ কারণ লিপিবদ্ধ করে শিক্ষানবিসির মেয়াদ এমনভাবে বৃদ্ধি করতে পারেন যাতে বর্ধিত মেয়াদ সর্বসাকুল্যে দুই বছরের অধিক না হয়। যে ক্ষেত্রে কোন শিক্ষানবিসের শিক্ষানবিসির মেয়াদ চলাকালে নিয়োগ কর্তৃপক্ষ মনে করেন যে, তার আচরণ ও কর্ম সন্তোষজনক নয়, অথবা তার কর্মদক্ষ হওয়ার সম্ভাবনা নেই, সে ক্ষেত্রে নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে শিক্ষানবিসের চাকরিকাল অবসান ঘটাতে পারবে এবং পদোন্নতির ক্ষেত্রে, তাকে যে পদে পদোন্নতি দেয়া হয়েছিল সে পদে প্রত্যাবর্তন করাতে পারবেন। নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ যদি এই মর্মে সন্তুষ্ট হয় যে, শিক্ষানবিসির মেয়াদকালে শিক্ষানবিসির আচরণ ও কর্ম সন্তোষজনক তা হলে তাকে চাকরিতে স্থায়ী করবেন। আর যদি শিক্ষনবিসের আচরণ ও কর্ম সন্তোষজনক না থাকে সে ক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষ সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে, তার চাকরির অবসান ঘটাতে পারবে এবং পদোন্নতির ক্ষেত্রে, তাকে যে পদে থেকে পদোন্নতি প্রদান করা হয়েছিল সেই পদে প্রত্যাবর্তন করাতে পারবেন। সরকারী আদেশ বলে পরীক্ষার আয়োজন করে তাতে উত্তীর্ণ না হওয়া পর্যন্ত কোন শিক্ষানবিসিকে কোন নির্দিষ্ট পদে স্থায়ী করা যাবে না।

ছবি
ছবি
ডাউনলোড